অষ্টম শ্রেণি: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি | তৃতীয় অধ্যায় | রচনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
শ্রেণি: অষ্টম অধ্যায়: তৃতীয় অধ্যায়রচনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা রক্ষায় কি কি করা উচিত? পাসওয়ার্ড ব্যবহারের সুবিধাসমূহ লিখ।
ভূমিকা: বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর যুগে ডিজিটাল নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন ব্যাংকিং, শিক্ষা বা কর্মসংক্রান্ত অ্যাকাউন্ট—সবকিছুই নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন হয় একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড। পাসওয়ার্ড যেন কারও সাথে শেয়ার না হয়, এজন্য গোপনীয়তা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা রক্ষায় করণীয়:
১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার: পাসওয়ার্ডে বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন ব্যবহারbকরা উচিত। যেমন: P@ssw0rd#2025
২. একই পাসওয়ার্ড বারবার ব্যবহার না করা: ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্টে ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে নিরাপত্তা বাড়ে।
৩. নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা: প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস পরপর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা নিরাপদ।
৪. অপরিচিত লিংকে ক্লিক না করা: ফিশিং ওয়েবসাইটে পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেললে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৫. Two-Factor Authentication ব্যবহার করা: পাসওয়ার ছাড়া আরও একটি ধাপ (যেমন: মোবাইলে কোড) দিয়ে লগইন নিশ্চিত করা হয়।
৬. বিশ্বস্ত ডিভাইসে লগইন করা: পাবলিক কম্পিউটার বা অচেনা ডিভাইসে পাসওয়ার্ড টাইপ না করাই ভালো।
পাসওয়ার্ড ব্যবহারের সুবিধাসমূহ:
১. তথ্য নিরাপত্তা: ব্যক্তিগত ও গোপন তথ্য রক্ষা পায়।
২. অনুমোদিত প্রবেশাধিকার: শুধু অনুমোদিত ব্যক্তি অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারে।
৩. অর্থনৈতিক সুরক্ষা: অনলাইন ব্যাংকিং বা লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
৪. ডিজিটাল পরিচয় রক্ষা: হ্যাকিং বা পরিচয় চুরির হাত থেকে রক্ষা করে।
উপসংহার: পাসওয়ার্ড একটি ডিজিটাল চাবির মতো। এই চাবি যদি সঠিকভাবে রক্ষা করা যায়, তবে অনলাইনে থাকা আমাদের যাবতীয় তথ্য ও সম্পদ থাকবে নিরাপদ। তাই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড ব্যবহারে সতর্কতা ও সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
২। হ্যাকিং কী? এটিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় কেন—বর্ণনা কর।
ভূমিকা: বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। ইন্টারনেটভিত্তিক কাজকর্ম যেমন বাড়ছে, তেমনি বেড়েছে অনলাইন অপরাধের সংখ্যাও। এই অপরাধগুলোর মধ্যে ‘হ্যাকিং’ অন্যতম। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অপরাধীরা অন্যের কম্পিউটার বা অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে প্রবেশ করে, যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
হ্যাকিং কী?
হ্যাকিং হলো অবৈধভাবে কোনো কম্পিউটার সিস্টেম, নেটওয়ার্ক বা অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা এবং সেখানে তথ্য পরিবর্তন, চুরি বা নষ্ট করা। এটি প্রযুক্তিগত জ্ঞান ব্যবহার করে গোপনে পরিচালিত একটি কার্যকলাপ।
হ্যাকিং অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়ার কারণ:
১. ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন: হ্যাকাররা অন্যের ব্যক্তিগত ছবি, বার্তা, তথ্য হাতিয়ে নেয়।
২. অর্থনৈতিক ক্ষতি: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা চুরি করা হয়।
৩. ভুয়া পরিচয় ব্যবহার: অন্যের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করা হয়।
৪. গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধ্বংস: সরকারি, বেসরকারি বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলা হয়।
৫. সাইবার সন্ত্রাসবাদ: দেশের গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক হ্যাক করে বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করা হয়।
৬. আইন পরিপন্থী কাজ: হ্যাকিং তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিপন্থী।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন ব্যক্তি যদি অন্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঢুকে মেসেজ পড়ে অথবা মেসেজ পাঠায়, তাহলে সেটিও হ্যাকিং। আবার কেউ যদি একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ঢুকে পেজ পরিবর্তন করে দেয়, সেটাও হ্যাকিং।
উপসংহার: হ্যাকিং একটি গুরুতর অপরাধ। এটি শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং সমাজ ও দেশের জন্যও বড় হুমকি। তাই সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইন প্রয়োগের মাধ্যমে হ্যাকিং রোধ করা জরুরি। নিরাপদ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
৩। তথ্য অধিকার ও তথ্য আইন কী? দুর্নীতি দমনে তথ্য অধিকার আইনের ভূমিকা বিস্তারিত আলোচনা কর।
ভূমিকা: গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। আর এই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকার থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকার এই লক্ষ্যে ২০০৯ সালে "তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯" চালু করে। এই আইন সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তথ্য অধিকার কী?
তথ্য অধিকার মানে হলো—প্রত্যেক নাগরিকের সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও নির্দিষ্ট বেসরকারি সংস্থার কাছে তথ্য পাওয়ার আইনগত অধিকার।
তথ্য আইন কী?
তথ্য আইন এমন একটি আইন যা নাগরিকদের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করতে।
দুর্নীতি দমনে তথ্য অধিকার আইনের ভূমিকা:
১. সরকারি কাজের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি: সরকারি দপ্তরগুলোর কার্যক্রম জনগণের কাছে উন্মুক্ত হয়।
২. জবাবদিহিতা নিশ্চিত: কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ভুল
করলে জনগণ তথ্য নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে।
৩. দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ: অনিয়ম, ত্রুটি বা অর্থ আত্মসাতের তথ্য জানা সম্ভব হয়।
৪. সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের সহায়তা: অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সহজ হয় এবং সঠিক তথ্য পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
৫. জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি: জনগণ জানে কোথায় কী অনিয়ম হচ্ছে, ফলে তারা প্রতিবাদ করতে পারে।
৬. ভয়ভীতি দূর করা: তথ্য জানার অধিকার থাকায় দুর্নীতিবাজদের ভয় হয়।
উপসংহার: তথ্য অধিকার আইন দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অস্ত্র। এ আইন প্রয়োগ করে সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, ও সুশীল সমাজ দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তাই আমাদের উচিত এই আইন সম্পর্কে জানা ও প্রয়োগ করা।
৪। সাইবার অপরাধ কী? চারটি সাইবার অপরাধ সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
ভূমিকা: বর্তমানে ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। এর সুফল যেমন অনেক, তেমনি কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধমূলক কাজ করছে। এসব অপরাধকে বলা হয় ‘সাইবার অপরাধ’। এটি ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
সাইবার অপরাধ কী?
সাইবার অপরাধ হলো কম্পিউটার, ইন্টারনেট বা ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সংঘটিত যেকোনো অপরাধ। এর মধ্যে তথ্য চুরি, হ্যাকিং, প্রতারণা, পর্নোগ্রাফি ছড়ানো, মানহানিকর পোস্ট দেওয়া ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
চারটি সাধারণ সাইবার অপরাধ:
১. হ্যাকিং: অন্যের কম্পিউটার বা অ্যাকাউন্টে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করে তথ্য চুরি বা পরিবর্তন করা। যেমন: ফেসবুক
বা ইমেইল হ্যাক করে মেসেজ পড়া বা মুছে ফেলা।
২. ফিশিং (Phishing): ভুয়া ওয়েবসাইট বা ই-মেইলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য (ব্যাংক পাসওয়ার্ড) চুরি করা। এর মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।
৩. অনলাইন হয়রানি ও সাইবার বুলিং: সামাজিক মাধ্যমে কাউকে কটূক্তি, ভয়ভীতি দেখানো বা মানসিক আঘাত দেওয়া। অনেক সময় গোপন ছবি/ভিডিও ছড়িয়ে মানহানি
করা হয়।
৪. ডিজিটাল প্রতারণা: ভুয়া বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্য বিক্রয়, লটারির লোভ দেখিয়ে টাকা নেওয়া ইত্যাদি। যেমন: “আপনি ৫ লাখ টাকা জিতেছেন”—এমন বার্তা দিয়ে
প্রতারণা করা।
উপসংহার: সাইবার অপরাধ দিন দিন বেড়ে চলেছে, তাই আমাদের সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষকে এসব অপরাধ থেকে বাঁচতে ডিজিটাল নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে কঠোর আইন প্রয়োগ করে এসব অপরাধ দমন করতে হবে।
৫। কম্পিউটার ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার কীভাবে কাজ করে – ব্যাখ্যা কর
ভূমিকা: কম্পিউটার প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি বাড়ছে সাইবার ঝুঁকি। ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার হলো এমন কিছু ক্ষতিকর প্রোগ্রাম যা কম্পিউটার ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এসব সফটওয়্যার গোপনে কম্পিউটারে প্রবেশ করে ডেটা নষ্ট করে বা চুরি করে।
কম্পিউটার ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার কীভাবে কাজ করে:
১. আত্মপ্রতিলিপি তৈরি: ভাইরাস নিজের কপি অন্য ফাইল বা প্রোগ্রামে সংযুক্ত করে। সংক্রমিত ফাইল চালু হলেই ভাইরাস ছড়ায়।
২. ব্যবহারকারীর অজান্তে কাজ করা: ম্যালওয়্যার গোপনে কাজ করে, যেমন: কী-লগার ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড সংগ্রহ।
৩. ফাইল/ডেটা নষ্ট করা: অনেক ভাইরাস ডেটা পরিবর্তন
করে বা ডিলিট করে দেয়।
৪. নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়া: ই-মেইল, ইউএসবি বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার এক কম্পিউটার
থেকে অন্যটিতে ছড়ায়।
৫. সিস্টেম স্লো করা: কম্পিউটার ধীরে চলে, মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যায়।
৬. ব্যাকডোর তৈরি: কিছু ম্যালওয়্যার দূরবর্তী হ্যাকারকে কম্পিউটারে প্রবেশের সুযোগ দেয়।
উপসংহার: কম্পিউটার ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার আমাদের ডিজিটাল জীবনকে বড় হুমকির মুখে ফেলে। সুরক্ষার জন্য অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার, নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট এবং সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক না করাই সবচেয়ে ভালো প্রতিরোধ।
৬। ম্যালওয়্যার বলতে কী বোঝ? প্রচলিত ও শনাক্তকৃত ম্যালওয়্যারের বর্ণনা দাও।
ভূমিকা: 'ম্যালওয়্যার’ শব্দটি এসেছে ‘Malicious Software’ থেকে। এটি এমন ক্ষতিকর সফটওয়্যার যা কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কে নানারকম ক্ষতি করতে পারে। এটি ব্যবহারকারীর অজান্তে ইনস্টল হয়ে তথ্য চুরি, ডেটা নষ্ট, বা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে।
ম্যালওয়্যার কী: ম্যালওয়্যার হলো এমন প্রোগ্রাম যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই ক্ষতিকর উদ্দেশ্যে কম্পিউটারে প্রবেশ করে।
প্রচলিত ও শনাক্তকৃত ম্যালওয়্যারের ধরন:
১. ভাইরাস: নিজে থেকে ফাইলের মধ্যে কপি হয়ে ছড়ায়।
উদাহরণ: CIH, MyDoom।
২. ওয়ার্ম (Worm): এটি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে দ্রুত ছড়ায়। যেমন: Blaster Worm।
৩. ট্রোজান হর্স: সাধারণত অন্য সফটওয়্যারের আড়ালে লুকানো থাকে। যেমন: Zeus Trojan।
৪. স্পাইওয়্যার: এটি ব্যবহারকারীর গতিবিধি গোপনে রেকর্ড করে। যেমন: CoolWebSearch।
৫. র্যানসমওয়্যার: ইহা ফাইল লক করে মুক্তিপণ দাবি করে। যেমন: WannaCry।
৬. অ্যাডওয়্যার: অযাচিত বিজ্ঞাপন দেখিয়ে বিরক্ত করে।
উপসংহার: ম্যালওয়্যার শুধু ব্যক্তিগত নয়, ব্যবসায়িক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। তাই সচেতনতা, নিরাপদ সফটওয়্যার ব্যবহার এবং সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
৭। এথিক্যাল হ্যাকার কী? বিভিন্ন প্রকার হ্যাকার সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।
ভূমিকা: ‘হ্যাকার’ শব্দটি শুনলেই সাধারণত নেতিবাচক অর্থ বোঝানো হয়। কিন্তু সব হ্যাকারই অপরাধী নয়। অনেক হ্যাকার সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করেন। তাদের বলা হয় ‘এথিক্যাল হ্যাকার’।
এথিক্যাল হ্যাকার কী: এথিক্যাল হ্যাকার হলেন সেই ব্যক্তি যিনি প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে তাদের সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের করেন এবং তা ঠিক করতে সাহায্য করেন। তাদের কাজ হলো হ্যাকারদের আগেই সমস্যা শনাক্ত করা।
হ্যাকারদের বিভিন্ন ধরন:
১. হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার (White Hat): হোয়াইট হ্যাট হ্যাকাররা নৈতিক কাজ করেন এবং নিরাপত্তা উন্নয়নে সহায়তা করেন।
২. ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার (Black Hat): অবৈধভাবে কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করে তথ্য চুরি বা ক্ষতি করে।
৩. গ্রে হ্যাট হ্যাকার (Gray Hat): কখনো ভালো, কখনো খারাপ কাজ করেন। অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করেন, তবে ক্ষতি না করলেও সেটা আইনসিদ্ধ নয়।
৪. স্ক্রিপ্ট কিডি (Script Kiddie): অন্যের তৈরি কোড ব্যবহার করে হ্যাকিং করে। তেমন দক্ষতা থাকে না।
৫. হ্যাকটিভিস্ট (Hacktivist): রাজনৈতিক বা সামাজিক বার্তা দিতে হ্যাকিং করে।
উপসংহার: সব হ্যাকার খারাপ নয়। সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে এথিক্যাল হ্যাকার হওয়া তরুণদের জন্য ক্যারিয়ার গঠনের একটি দারুণ সুযোগ। ডিজিটাল যুগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এদের গুরুত্ব অপরিসীম।
৮। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা রক্ষায় করণীয় পদক্ষেপগুলো সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
ভূমিকা: নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা আজকের দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি। ব্যক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—সব তথ্য আজ ইন্টারনেটে সংরক্ষিত থাকে। তাই এসব তথ্য রক্ষায় নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা খুবই প্রয়োজন।
নিরাপত্তা রক্ষায় করণীয় পদক্ষেপ:
১. ফায়ারওয়াল ব্যবহার: অবাঞ্ছিত নেটওয়ার্ক প্রবেশ ঠেকায়।
২. এন্টিভাইরাস ইনস্টল: ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার শনাক্ত করে ও মুছে ফেলে।
৩. দৃঢ় পাসওয়ার্ড ব্যবহার: পাসওয়ার্ড যেন সহজে অনুমান করা না যায়।
৪. নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট: পুরনো সফটওয়্যারে নিরাপত্তার ঘাটতি থাকে।
৫. ইনক্রিপশন ব্যবহার: তথ্য আদান-প্রদানে এনক্রিপশন ব্যবহার করে হ্যাকার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৬. Two-factor Authentication: পাসওয়ার্ড ছাড়াও অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
৮. ব্যাকআপ রাখা: ডেটা হারালে পুনরুদ্ধার করা সহজ হয়।
৯. সচেতনতা বৃদ্ধি: ফিশিং লিংকে ক্লিক না করা ও সন্দেহজনক ফাইল না খোলা ইত্যাদি।
উপসংহার: নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা রক্ষা করতে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সরকারকে একযোগে কাজ করতে হবে। নিরাপদ ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য প্রতিটি ব্যবহারকারীর সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Comments
Post a Comment